মাঝে মাঝে যখন খুব মন খারাপ থাকে, রুম থেকে বেরিয়ে পড়ি। কিছু কিছু বিকেলে খুব বিষণ্নতা পেয়ে বসে। রুম থেকে বেরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি।কালো-সাদা কাকের উড়াউড়ি দেখি। আকাশেরঅনেক উঁচুতে দেখা যায় আমার মতই দু-একটা নিঃসঙ্গ চিল। আমার কিছুই ভালো লাগে না।
কিছুই করতে ইচ্ছে করে না। খুব হতাশায় পেয়ে বসে। স্মরণ করতে চাই প্রিয় সব মুখ, প্রিয় সব মূহুর্তগুলো। অস্থিরতা কাটানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে।চুপ মেরে বসে থাকি অনেকক্ষণ। বোবার মত নয়, অনেকটা ধ্যানীর মত। মনে কোনো ভাবনা নেই, কিংবা এত বেশি ভাবনা যে ঠিক সংজ্ঞায়িত করা যায় না, কিংবা নির্দিষ্ট করা যায় না। দু-চার জন আড়চোখে তাকায়। কিছু হয়তো বলতে চায়, কিন্তু বলে না। আমি কৃতজ্ঞ থাকি। কারণ আমি জানি কারো সাথে কথা বলাটা হত এই মূহুর্তে আমার জন্য সবচেয়ে বিরক্তিকর কাজ। আমি নিজেরমাঝে নিজের কাছে ডুব দিয়ে এই সময়টা কাটাতে চাই। অসংখ্য বিকেল আফ্রিকার এই দূর্গম প্রান্তরে এভাবেই কাটিয়েছিলাম। নিশ্চুপ। নিস্তব্দ। নির্বাক। নিঃসঙ্কোচ। নিরানন্দ। নির্জন। নির্মল।নিষ্কলুষ। নিরাবেগ। নিরুপায়। নিদারুণ।
মাঝে মাঝে বের হতাম ক্যামেরাটা নিয়ে। রুমের আশে-পাশে ছিল কিছু ফুলের গাছ। ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ভালো লাগতো। দু-চারটা ছবি তুলতাম। ফুলের পাশে ভ্রমর আর মৌমাছির উড়াউড়ি দেখতাম। এভাবেও কেটে গেছে অনেকগুলো বিকেল। ফুলের সাথে। মৌমাছির সাথে। ভ্রমরের সাথে। সবুজ কচি-পাতার সাথে। পাতার উপর টলোমলো জলবিন্দুর সাথে। পাতার উপর পিছলে পড়া বিকেলের নরোম রোদ ও আলোর সাথে।
এভাবেই কেটে যায় বিকেল, এভাবেই কেটে যায় একটা গোটা জীবন।
বুনিয়া, ডি আর কঙ্গো
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন