মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১১

পরবাসী মন

আর কিছুক্ষণ পরে মেঘের অতলে হারিয়ে যাবে এই ঘুমকাতুরে চাঁদ। চারপাশের অফুরন্ত আঁধার এসে হামলে পড়বে আমার এই নিস্তব্দ নিরালা নীড়ে। যে কয়েক টুকরো চাঁদের আলো জানালার ফাঁক গলে আমার শরীরে এঁকে দিয়েছিল এক অপূর্ব ও অস্থির শিল্পকলা তা অন্ধকারের কালো রঙে মুছে যাবে।

 এই জীবনে এই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি আর হবে না, কেউ তাগাদা অনুভব করবে না যে একটা শিল্প-আলোচনা লেখা দরকার এই অভাবনীয় সৃষ্টিকর্মের। আমার ভুলোমন থেকে গায়েব হয়ে যাবে এই মাহেন্দ্রক্ষণ, যেরকম অগুনিত নশ্বর স্মৃতিকে আমি পাঠিয়ে দিয়েছে না ফেরার দেশে।
আমার দু’চোখ জুড়ে আসা প্রতিদিনকার ঘুম আজ কি এক অভিমানে অনেক দূরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। কি এক আহত অভিমানে আমার নিশীত-রাতের-অপলক-চোখে ভর করেছে শ্রাবণের অবিরল জলধারা। কোন দুঃখ বা বেদনাকে আমি আমন্ত্রণ জানিয়ে পিড়ি পেতে বসতে দেয় নি এই হৃদয়-তলে, তাহলে কোন্ সুদূরের ওপার হতে দু-কুল প্লাবী আবেগোচ্ছ্বাস অজানিতে এসে আশ্রয় নিলো এই ভগ্ন-মন্দিরে? জোৎস্না-মদির এই নির্জন রাতে কেউ বাঁশিতে তুলে নি হারানো প্রিয়ার জন্য সকরুণ সুর, কিংবা অনেক দূরের নিঃসঙ্গ নদী ছলাৎ ছলাৎ শব্দে কারো হৃদয়-কূলে আছড়ে পড়ে নি। অনেক দূর-দূরান্ত হতে ভেসে আসা বাতাসে নেই হাহাকারের হিম হিম শোঁ শোঁ মৃদু অনুরণন, বাতাস আজ কারো মলিন দরজায় আচানক কড়া নাড়ছে না জীবনের গ্লানি বয়ে বেড়ানো কোনো অনিকেত ব্যাথাতুর মুসাফিরের মতো।
তবুও কেন এই বিজন পরবাসে এই নিঃসঙ্গ মন সান্ত্বনার ভেলায় চড়ে পাড়ি দিতে পারছে না অনেক দূরের কোনো চির আনন্দময় ভূবনে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন