বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৩

আমাদের গেছে যে দিন ( ক্যাম্পাস পর্ব)

অনেকদিন পর গেলাম প্রিয় ক্যাম্পাসে। প্রায় ১ বছর পর আফ্রিকা আর ইউরোপ ঘুরে নিজের দেশে পা দিলাম। প্রিয় এক বন্ধুকে নিয়ে রওনা দিলাম ক্যাম্পাসের পথে। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করেছি প্রায় বছর চারেক হলো। বছর তিনেক আগে একবার গিয়েছিলাম সার্টিফিকেট তুলতে। অনেক দিন পর আবার খুঁজতে গেলাম পুরনো সেই দিনগুলোকে। দিনটি ছিল ১৬ অক্টোবর ২০১২।

জীবনের কি অসাধারণ সব মুহূর্ত পার করেছিলাম এখানে। কতশত স্বপ্ন বুকে নিয়ে এই বিদ্যাপীটে পড়েছিল আমার দর্পিত পা। ক্যম্পাসের সবুজ বাতাসের ভেতর ডুবে ছিলাম কত দিবস-রজনী। ঝুপড়িতে বসে চায়ের কাপে তুলেছিলাম ঝড়। জারুল তলায় নরম কচি ঘাসে দু-পা ছড়িয়ে বসে কাটিয়েছিলাম অনেকগুলো সকাল দুপুর, দিয়েছিলাম সবান্ধব ম্যারাথন আড্ডা।  শাটল ট্রেনে হেড়ে গলায় গিয়েছিলাম কত সব গানঃ কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই ... আজ আর নেই...

পাঁচ বছরের শিক্ষা কোর্স শেষ করতে লেগেছিল সাড়ে সাত বছর। কিন্তু ক্লান্তি বা বিরক্তি আমাকে খুব একটা ছোঁয় নি। প্রতিটা দিন নব উদ্দীপনা আর প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। এই ক্যাম্পাস আমার ভেতর বুনে দিচ্ছিল এক নতুন মানুষ। নবজন্মের সূচনা হয়েছিল আমার এ-ক্যাম্পাসের ছত্র-ছায়ায়। শিক্ষকরা যা শিখাতেন চেষ্টা করতাম তার চেয়ে বেশি কিছু শিখতে। ভাবার চেষ্টা করতাম আরো বেশি কিছু। মনের ভেতর আঁকুপাকু করত হাজারো প্রশ্ন। পেয়েছিলাম অসাধারণ কিছু সহপাঠী, বন্ধু। যাদের অনেকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। যখনই পিছন ফিরে তাকায় মনে পড়ে প্রিয় সেইসব মুখ।  যাদের অবদানও কখনো ভুলবার নয়।

ছবি- ১












বিজ্ঞান অনুষদের দিকে যাওয়ার পথে
চোখে পড়ল একটা কাঠ-বিড়ালী। ছবি
তোলার লোভ সামলাতে পারলাম না।

ছবি - ২














ক্যাম্পাসের কিছু জায়গায় কিছু স্থানীয়
লোক কাজ করে। খুব ভালো আদা-র চাষ হয়
ক্যাম্পাসের কিছু জমি-তে। এক শ্রমিক আদা
সংগ্রহ শেষে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছেন।

ছবি- ৩













আহ! আমাদের সেই প্রিয় ঝুপড়ি।
কত-শত ঘণ্টা কাটিয়েছি এখানে আড্ডা দিয়ে।
সেই বিখ্যাত মউয়ের দোকানের চা খাই না কত দিন!

ছবি-৪














বিজ্ঞান অনুষদ এলাকাটা ভ্রমণের সময় চোখে
পড়ল এই পাতাহীন বৃক্ষ। পাশ দিয়ে চলে গেছে
বেশ কিছু বৈদ্যুতিক তার। বেশ হিজিবিজি অবস্থা!

ছবি-৫














বিজ্ঞান অনুষদ/ সায়েন্স ফ্যাকাল্টির  প্রবেশ পথ।

ছবি-৬













বিজ্ঞান অনুষদে যাওয়ার পথে একটা
চমৎকার ব্যাঙের সাথে দেখা। সেই স্মৃতিকে স্মরণীয়
করে রাখার জন্য এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
ভালো থেকো প্রিয় ব্যাঙ!

ছবি-৭














অবসরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন জনৈক রিকশাওয়ালা মামা।
উৎসুক চোখে তাকিয়ে কী দেখছেন কে জানে!

ছবি-৮














ভাষা-শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার।
কলা-ভবনের সামনে। টেরাকোটার কাজটা আগে ছিল না।
নব-নির্মিত। পূর্বে চবি ক্যাম্পাসে উল্লেখযোগ্য কোনো ভাস্কর্য ছিল না।
আরো অনেক অনেক ভাস্কর্য নির্মিত হোক প্রিয় এ-ক্যাম্পাসে।

ছবি-৯                                                                      


প্রিয় জারুল তলা।

ছবি- ১০                                                                    














ক্যাম্পাসের অন্যতম ভাস্কর্য। স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ স্মরণে নির্মিত।

ছবি-১১                                                                                                                                                                                




কাটা-পাহাড়ের সেই রাস্তা। ক্লাস শেষে কত হেঁটেছি এই রাস্তায়।
ক্যাম্পাসে প্রবেশের অন্যতম পথ এই কাটা-পাহাড়।
পাহাড় কেটে এই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছিল বলে এইরূপ নামকরণ।
এখন সবুজে সবুজময়।
আগে এত গাছ-গাছালি ছিল না পাহাড়ের গায়ে।

ছবি - ১২














প্রিয় কলা অনুষদ। এই প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকে  দ্বিতীয় তলায় ওঠে একটু বামে
মোড় নিলে বাংলা বিভাগ, ডানে ইংরেজি বিভাগ। বাংলা বিভাগ হয়তো ভুলে গেছে
তার প্রিয় এক ছাত্রের নাম। কিন্তু সে আজো ভুলে নি তার প্রিয় সে শ্রেণীকক্ষগুলো,
প্রিয় শিক্ষকদের নাম। ভোলা সম্ভব নয় কখনো।

ছবি - ১৩














ক্যাম্পাসে দেখা হয়ে গেল এক প্রাক্তন ছাত্রের সাথে, যে এখন পড়ে
এ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। মনে পড়ে গেল নিজের ছাত্রজীবনের কথা।

ছবি - ১৪














ক্যাম্পাসের সেই বিখ্যাত শাটল ট্রেন।

ছবি -১৫














ট্রেন আসছে ক্যাম্পাসের স্টেশনে। আমাদের প্রতীক্ষার হলো অবসান।
সব পাখি নীড়ে ফিরে। আমাদেরও ফিরে যেতে হবে, ফিরে যেতে হয়।

ছবি - ১৬














বৈকালিক ট্রেনের ছাদে আলাপচারিতায় নিমগ্ন দুই ছাত্র।

ছবি ১৭














ক্যাম্পাসের কাক। কাকে ডাকছে এত অধীর আগ্রহে?

ছবি ১৮














ডঃ আব্দুল করিম ভবন। কলা অনুষদের ছাত্রদের জন্য।

ছবি ১৯














কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী, চ বি।

ছবি ২০














এবার ঘরে ফেরার পালা। আর একটু পরে ছেড়ে যাবে ট্রেন।
বিদায় প্রিয় ক্যম্পাস।
আবার হয়তো হবে দেখা, হয়তো হবে না, কে জানে!


1 টি মন্তব্য: