মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬

স্মৃতিঘেরা ক্যাম্পাসে একদিন


খুব সকালের ট্রেন ধ'রে আবার ক্যাম্পাস-এ গেলাম। প্রিয় ক্যাম্পাসে। কত পুরনো স্মৃতির আনাগোনা। কত-শত প্রিয় মুখ। শাটল ট্রেনের সেই তুমুল আড্ডা, গানের ভেলায় ঘণ্টা পার...
জানালা দিয়ে দেখা অপরূপা প্রকৃতি...শীতের হালকা আমেজ যখন মুখের উপর আছড়ে প'ড়ে এক অপার্থিব সুখ আমার অনুভূতিকে নাড়িয়ে দেয়। আজ আবারো সেই অভাবনীয় ভালো লাগা একটু অনুভূত হলো কি...! ট্রেন থেকে নেমে শীতের মিষ্টি রোদ মাড়িয়ে কাটা পাহাড় দিয়ে কলাভবনের দিকে যে যাত্রা ২০০০ সালের কোনো এক নরোম সকালে মঞ্চায়িত হয়েছিল এই মর্ত্যের পৃথিবীতে সেই বিবর্ণ কিন্তু উজ্জ্বল দৃশ্যপট হঠাৎ মনের ঘরে উঁকি দিল আজ! আমরা কি তবে কিছুই ভুলি না, স্মৃতিরা মস্তিস্কের নিউরনের কোনো গলি-ঘুপচিতে শীত-নিদ্রায় দিনাতিপাত করে অনাদিকাল! সময়মত মাথা চাড়া দিয়ে জানান দেয় তার তীক্ষ্ণ ও তীব্র অস্তিত্বের কথা? তার আজন্ম বেঁচে থাকার সাধ!
 'জারুল তলায় প্রাণের মেলায়' আবার এক হয়েছিলাম আমরা চবি-র ৩৫ তম ব্যাচের বন্ধুরা। অভাবনীয় এক প্রাণচাঞ্চল্য ভর করেছিলো সবার মধ্যে; কর্মজীবনের একঘেয়েমিকে ভুলে, মধ্যিখানের অনেকগুলো বছরকে বেমালুম গায়েব ক'রে দিয়ে সবাই ফিরে গিয়েছিলাম পুরনো সেই দিনগুলোতে! ইতিউতি খুঁজে ফিরছলাম পুরনো সেই মুখগুলো। অনেকে এসেছিলেন সুখী গাম্ভীর্যময় চেহারা নিয়ে, সস্ত্রীক এসেছেন কেউ কেউ, সন্তানসন্ততি নিয়ে হাজির হয়েছিল গুটিকয়েক দম্পতিও, আগের মতই বাউণ্ডুলে, আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর পরিবর্তনহীন বন্ধুরাও এসেছিলেন। এ-এক অন্যরকম দিন! নিজেরাই খুঁজে ফিরছিলাম নিজেদেরকে। পুরনো বন্ধুদের দেখে সীমাহীন ভালোলাগায় ভ'রে গিয়েছিল মন। মনের কোনে ব্যথার কালোমেঘ হানা দিয়েছিল না-আসা বন্ধুদের বিরহে-ও। যে-সব বন্ধুরা চ'লে গিয়েছেন না ফেরার দেশে তাদের জন্য বুকের পাঁজরে হাহাকারের এক অবর্ণনীয় কষ্ট ঘাপটি মেরে ছিল সারাটা দিন।

জীবনে বয়ে যায়। বয়ে যায় সময়!

একটা পুরো দিন কী এক অলক্ষ্যে কেটে গেল টেরও পাই নি!

অতঃপর.........
সূর্যাস্তের আর বেশি বাকি নেই, আমাদের ফিরে যেতে হবে প্রাত্যহিক জীবনের আঙিনায়। রাত শেষে শুরু হবে আবার কর্মব্যস্ত দিন। কিন্তু এই যে ফেলে আসা দিন, এই-যে বেদনা-বিধুর অতীতে ফিরে যাওয়া, আনন্দের আতিশয্য ও হৈ-হুল্লোরে কাটানো একটা পুরোদিন - তা স্মৃতির মণিকোটরে জমা থাকবেন অনেকদিন। এইসব মূহুর্তগুলো জীবনকে করবে আরো রঙিন, সামনে এগিয়ে যাবার রসদ যোগাবে; আমাদেরকে আরো একটু উদ্যমী করবে, তারুণ্যে উদ্ভাসিত করবে। আমরা হয়তো আরো একটু বেশি সুখী হবো, আরো ভালোবাসবো এই জীবন-কে, এই বেঁচে থাকাকে।
যে-কোনো পুনর্মিলন আনন্দের। এই রকম মিলন বারবার আসুক আমাদের জীবনে।
================
৮ জানুয়ারি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ













































































































কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন