উগান্ডা। আফ্রিকার মুক্তা
বা পার্ল অব আফ্রিকা ।
নীল নদের উৎসের দেশ ও।
এর রাজধানী কাম্পালা; সাত
পাহাড়ের শহর। তবে
এই দেশটির পরিচিতি পৃথিবীর আনাচে
কানাচে ছড়িয়ে দিতে
যে ব্যক্তি অপরিসীম ভূমিকা
রাখেন তিনি জলপাই
রঙের শাসক ইদি
আমিন। রাষ্ট্রনায়ক এক
ছিলেন বটে। তার
শাসনামলে প্রায় ৩
লাখ লোক প্রাণ
হারায়। কারো কারো
মতে এই সংখ্যা
৫ লাখের মত।
তার স্বৈর-শাসনের
ইতিহাস আজো অত্র
অঞ্চলের মানুষের মনে
দগদগে ক্ষত হয়ে
বিরাজমান।
পূর্ব আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটির আবহাওয়া প্রায় আমাদের দেশের মতই, তবে গরমের ও শীতের তীব্রতাটা আমাদের দেশের তুলনায় একটু কম। অশান্ত-অস্থির ও গৃহযুদ্ধের বিভীষিকাময় অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশে এই দেশটি আপাতত একটি আশির্বাদ। তবে তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতই আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা অতিশয় না হলেও কিছুটা নাজুক। কাজেই আশির্বাদ কখন আবার অভিশাপে রূপ নেয় বলা কঠিন। গত ছাব্বিশ বছর যাবত ইয়োঅরি কাগুতা মুসোবিনী (Yoweri Kaguta Museveni) নামক এক ভদ্রলোক দেশটি শাসন করছেন। তার জনপ্রিয়তা ব্যাপারটা আমার কাছে খোলাসা নয়, তবে বেশ কয়েক বছর ধরে নির্বাচনে জিতে আসছেন। দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো না হলেও, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য রকম ভালো বলে মনে হয়েছে। যদিও দুর্নীতিতে দেশটি বেশ অগ্রসর বলে মনে হল। ওখানকার ট্রাফিক-পুলিশ দেখলাম আমাদের দেশের পুলিশ ভাইদের মত উপরি কামাইয়ে সদা ব্যস্ত; রাস্তায় তক্কে তক্কে থাকে কখন কাকে পাকড়াও করতে পারবে। তবে সাধারণত ট্রাফিক আইন ভঙ্গ না করলে কাউকে ঘাটানোর চেষ্টা করে না। আর যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে; সেটা যে ধরনের অন্যায়ই হোক না কেন সাধারণত কিছু মুদ্রা নিয়ে চক্ষু মুদ্রিত করে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। অবশ্য গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেললে ভিন্ন কথা। কাম্পালা শহর ঘোরার সময় আমাদের ড্রাইভারও দেখলাম এদের চক্করে পড়েছে, এবং যথারীতি কিছু দক্ষিণা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পরে দেখলাম ওদের চৌদ্দ পুরুষ উদ্ধার করার পরিবর্তে ওদের জন্য তার সহানুভূতি ব্যক্ত করছে। ব্যাপার এরূপ দেখে আমি নড়েচড়ে বসলাম এবং তার বক্তব্যের যে শানে-নযুল আবিষ্কার করলাম তা হলো ওরা নামমাত্র বেতন পায় এবং ওদের কারো চাকরি স্থায়ী নয়। অনেকটা সেচ্ছাশ্রমের মত ব্যাপার। তবে খুব ভালোবাসা থেকে যে তারা এই শ্রম দিচ্ছে তা নয়, দেশটিতে হাজারও বেকার গিজগিজ করছে। চাকরির বাজার দেখলাম আমাদের দেশের চেয়েও করুণ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়েও নামমাত্র বেতনের চাকরি পেতে হিমশিম খেতে হয়।
পূর্ব আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটির আবহাওয়া প্রায় আমাদের দেশের মতই, তবে গরমের ও শীতের তীব্রতাটা আমাদের দেশের তুলনায় একটু কম। অশান্ত-অস্থির ও গৃহযুদ্ধের বিভীষিকাময় অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশে এই দেশটি আপাতত একটি আশির্বাদ। তবে তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতই আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা অতিশয় না হলেও কিছুটা নাজুক। কাজেই আশির্বাদ কখন আবার অভিশাপে রূপ নেয় বলা কঠিন। গত ছাব্বিশ বছর যাবত ইয়োঅরি কাগুতা মুসোবিনী (Yoweri Kaguta Museveni) নামক এক ভদ্রলোক দেশটি শাসন করছেন। তার জনপ্রিয়তা ব্যাপারটা আমার কাছে খোলাসা নয়, তবে বেশ কয়েক বছর ধরে নির্বাচনে জিতে আসছেন। দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো না হলেও, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য রকম ভালো বলে মনে হয়েছে। যদিও দুর্নীতিতে দেশটি বেশ অগ্রসর বলে মনে হল। ওখানকার ট্রাফিক-পুলিশ দেখলাম আমাদের দেশের পুলিশ ভাইদের মত উপরি কামাইয়ে সদা ব্যস্ত; রাস্তায় তক্কে তক্কে থাকে কখন কাকে পাকড়াও করতে পারবে। তবে সাধারণত ট্রাফিক আইন ভঙ্গ না করলে কাউকে ঘাটানোর চেষ্টা করে না। আর যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে; সেটা যে ধরনের অন্যায়ই হোক না কেন সাধারণত কিছু মুদ্রা নিয়ে চক্ষু মুদ্রিত করে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। অবশ্য গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেললে ভিন্ন কথা। কাম্পালা শহর ঘোরার সময় আমাদের ড্রাইভারও দেখলাম এদের চক্করে পড়েছে, এবং যথারীতি কিছু দক্ষিণা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার পরে দেখলাম ওদের চৌদ্দ পুরুষ উদ্ধার করার পরিবর্তে ওদের জন্য তার সহানুভূতি ব্যক্ত করছে। ব্যাপার এরূপ দেখে আমি নড়েচড়ে বসলাম এবং তার বক্তব্যের যে শানে-নযুল আবিষ্কার করলাম তা হলো ওরা নামমাত্র বেতন পায় এবং ওদের কারো চাকরি স্থায়ী নয়। অনেকটা সেচ্ছাশ্রমের মত ব্যাপার। তবে খুব ভালোবাসা থেকে যে তারা এই শ্রম দিচ্ছে তা নয়, দেশটিতে হাজারও বেকার গিজগিজ করছে। চাকরির বাজার দেখলাম আমাদের দেশের চেয়েও করুণ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়েও নামমাত্র বেতনের চাকরি পেতে হিমশিম খেতে হয়।
কাম্পালা
কাম্পালা উগান্ডার রাজধানী। অন্য
দশটা উন্নয়নশীল দেশের
রাজধানী যে রকম,
কাম্পালাও দেখলাম তার
থেকে ব্যতিক্রম নয়।
ঘিঞ্জি পরিবেশ, যানজটের যন্ত্রণা, হকারের
হাউকাউ কোনো কিছুতে
পিছিয়ে থাকবে না
বলে কাম্পালার একটা
জেদ আছে। বড়সর
কিছু শপিংমল আছে,
মলিন ও বিমর্ষ
সরকারি অফিস আছে,
ফুটপাতে চিত হয়ে
শুয়ে থাকা দোকান-পাটও আছে।
এক আধটা ছিনতাইকারি ও
পকেটমার আছে বলে
শুনেছি, তবে ওই
ফাঁপড়ে পড়ি নি
বলে জোর গলায়
বলতে পারছি না।
এখানে অধিকাংশ ইলেকট্রনিক্সের দোকানগুলোর মালিক
ভারতীয়, দুই একটা
পাকিস্থানী দোকানও চোখে
পড়েছে। অনেক স্থানীয় লোক
এদের দোকানে কাজ
করে। শহরটিতে অসাধারণ কোনো
স্থাপনা চোখে পড়ে
নি। শুধু দৃষ্টি
কেড়েছে পাহাড়ের উপরকার
নয়নাভিরাম বাড়িগুলো। লিবিয়ার শাসক
গাদ্দাফির নামে খুব
সুন্দর একটা মসজিদ
দেখলাম, মনে পড়ল
ইদি আমিনের সাথে
গাদ্দাফির বন্ধুত্বের কথা।
ইদি আমিনের পক্ষ
হয়ে লড়ার জন্য
গাদ্দাফি বেশ কিছু
লিবিয়ান সৈন্য পাঠিয়েছিল উগান্ডায়, যাদের
মধ্যে প্রায় ৬০০
সৈন্য প্রাণ নিয়ে
মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে
পারে নি। পুরো
শহরে মাত্র একটা
ভাস্কর্য চোখে পড়েছিলো কিন্তু
ভাস্কর্যটি কার তা
উদঘাটন করতে পারি
নি। আমাদের ড্রাইভারের কাছে
এই মূর্তির পরিচয়
জানতে চেয়েছিলাম। সে
বলল মুর্তিটি কাম্পালা শহরের
প্রতিষ্টাতার।
যদিও তার কণ্ঠে
আত্মবিশ্বাসের
অভাব ছিল এবং
আমার মনে হয়েছে
সে জানে না,
আর আমাদেরকে কিছু
একটা বলা দরকার
তাই বলে দিল।
ভাস্কর্যটির ছবিঃ
অসংখ্য
মানুষের সাথে কাম্পালার অধিবাসী হিসেবে
বেশ কিছু পাখি
দেখলাম পুরো শহর
জুড়ে বসবাসরত। সেইসব
অকুতোভয় পাখিগুলোর নিরালা
নীড় হলো রাস্তার দু’পাশের বৃক্ষগুলো।
দেখুনঃ
চারিদিকের গাড়ির হর্ন, মানুষের হৈ চৈ, তাদের দৈনন্দিন জীবনকে এতটুকু টলাতে পারে নি
পাখিগুলোর নাম
মারাবউ
স্ট্রোক ( marabou
stroke)।
এদের আরেকটি নাম
হলো আন্ডারটেকার বার্ড (undertaker bird) । বৈজ্ঞানিক নাম
Leptoptilos crumeniferus । স্থানীয় লোকেরা
এগুলোকে কালৌরি নামে
ডাকে। পাখিটি উচ্চতায় প্রায়
দেড় মিটার এবং
এর পাখার আয়তন
প্রায় আড়াই মিটারের মত
হয়। এর গলা
থেকে মাংসের বেশ
বর্ধিত একটা অংশ
ঝুলে থাকে। পাখিগুলো বেশ
আলস্যপ্রিয় এবং বেশির
ভাগ সময় নিষ্কর্মার মত
বসে বসে ঝিমায়। সাধারণত শুষ্ক
মৌসুমে এরা লোকালয় বা
শহরের আশে পাশে
গাছের ডালে বাসা
বানিয়ে দিনাতিপাত করে।
আরো ছবিঃ
গাছের ডাল, বিদ্যুতের খাম্বা, বিল্ডিং-এর ছাদ সব জায়গায় তাদের স্বাধীন পদচারণাঃ
সামাজিক ও যৌথ জীবন তাদের পছন্দঃ
( চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন