জন্মজয় এক অন্যরকম যুদ্ধ-জয়ের কাহিনী। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের এক অপরাজেয় সংগ্রামের কাহিনীরূপ 'জন্মজয়'। নিঃসন্তান দম্পতির হৃদয় আকুল করা হাহাকারে ছুঁয়ে গেছে পৃথিবীর এ-প্রান্তের ও-প্রান্তের অগণন মানুষের হৃদয়। মানুষের জন্য মানুষের হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসার, স্নেহের, কল্যাণের অসামান্য আখ্যান বাদল সৈয়দের এ-গ্রন্থ।
প্রকৃতির রহস্যময় বৈরীভাব ও প্রতিবন্ধকতার নির্মম শিকার হাসান-রাবেয়া দম্পতি। কঠোর আত্মপ্রত্যয়ী এ-দম্পতি এগার বছরব্যাপী সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার মাধ্যমে যে-ইতিহাস নির্মাণ করেন তা ফিকশনকেও হার মানায়। সন্তান লাভের দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষাকে অন্তরে ধারণ করে পৃথিবীর তাবৎ হাসপাতালঃ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল, টোকিও ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল, ব্যাংকক হাসপাতাল ছাড়াও অসংখ্য হাসপাতাল তারা চষতে লাগলেন - আধুনিকতম চিকিৎসা-পদ্ধতি যদি তাদের দেখাতে পারে কিছুটা আশার আলো! একটা ফুটফুটে সন্তানের জন্য বিশাল স্নেহময় একটি কোল পেতে আছে এক নারী আর এক পুরুষ। বুকের ভেতর তাদের ভালোবাসার আর স্নেহের এক উথাল-পাথাল নদী।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি, টেস্টটিউবের মাধ্যমে সন্তান জন্মদান পদ্ধতির সফলতা, এ-দম্পতির আপ্রাণ চেষ্টা, তদুপরি কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকারের অপরিসীম ও অমানবীয় ক্ষমতা, বিশাল ও মহৎ হৃদয় ডাক্তারদের হার্দিক প্রচেষ্টা, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসার ও সহানুভূতির হাত তাদের সুদীর্ঘকালব্যাপী লালিত আকাঙ্ক্ষাকে একদিন পরিপূর্ণতা দেয়। পৃথিবীর সকল মানুষকে চমকে দিয়ে, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসার আর্তিকে সফল করে, নিউইয়র্কের সেন্ট জন কুইন্স হাসপাতালে এক নির্মল সকালে পৃথিবীর আলো-বাতাসকে প্রথমবারের মতো গায়ে মাখে রোজাবেল। গর্বে বুক ভরে যায় একজন মায়ের, আনন্দের আতিশয্যে বাকরুদ্ধ হন একজন পিতা। পুরো পরিবার, তাদের আশ-পাশের অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, দেশ-বিদেশের অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষীর মুখে মুখে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধজয়ের সুখ।
যাপিত জীবনের এ-রুদ্ধশ্বাস মানবিক গল্প বাদল সৈয়দের শৈল্পিক বয়ানে হয়ে উঠে জীবনের গভীর সত্যের শিল্পরূপ। প্রতিটি শব্দে, বাক্যে মিশে থাকা হার্দ্য আবেগ আমাদের মানবিক বোধের খুব গভীরে স্পর্শ করে। ধ্বংসের উৎসবে মুখর আজকের পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত যখন ধ্বনিত হচ্ছে পাশবিকতার চিৎকার, মানুষের মানবিক অনুভূতি ও উপলব্ধিতে যখন প্রতিনিয়ত প্রকট হচ্ছে ক্ষয়িষ্ণুতার চিহ্ন- ঠিক সেই মুহুর্তে বাদল সৈয়দ আমাদের সামনে তুলে ধরেন ড ওয়াং, ড ফুজিয়ামা, ড সুপাকডে ও ড শিশির দত্তের মতো দয়ার্দ্র মহৎ মানুষের প্রতিচিত্র। সত্যিই, মানুষই পারে ভালোবাসতে। মানুষই পারে বাৎসল্যের মানবিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রাণপণ সংগ্রাম করতে। ভালোবাসা বর্ধিষ্ণুই, তা ক্ষয়িষ্ণু হতে পারে না কখনো। মানুষ তার কোষে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মব্যাপী এই অক্ষয় বীজ বহন করে আসছে। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও একটি শিশুর নিরাপদ জন্মের জন্য রাবেয়ার যে-কামনা, ভাইয়ের সুস্থ ও জীবিত সন্তানের কামনায় প্রয়োজনে নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করার জন্য মমতাময়ী বোন শাহীনের যে-কাতরোক্তি - তা পাঠককে নিয়ে যায় এক পরম মানবিক অনুভবের জগতে।
বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর, জাপান, জাপান থেকে আয়ারল্যান্ড, সেখান থেকে ব্যাংকক, আমেরিকা - পৃথিবীর তাবৎ দেশ ঘুরে, অসংখ্য চিকিৎসক, নার্স, শুভাকাঙ্ক্ষীর সাহায্য সহযোগিতার মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে এসেছে যে নতুন অতিথি রোজাবেল, হাসান তাকে সর্বজনীন মানব কল্যাণে নিবেদন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন - " মা, আমি তোমাকে বড় করবো মানুষের জন্য। You will be on this earth to help other people. " - এ আবেগমন্দ্রিত স্বরে ব্যক্ত হয় মহৎ প্রত্যয়।
===========================================
জন্মজয়
লেখকঃ বাদল সৈয়দ
প্রকাশকঃ ক্যাম্পেইন ফর আর্টস এন্ড মিডিয়া প্রমোশন,
চট্টগ্রাম। জুন ২০০৬
প্রচ্ছদঃ খালিদ আহসান
দামঃ ৭০ টাকা
***বিশদ সংবাদ ১ম বর্ষ (ফেব্রুয়ারি ২০০৭) ১ম সংখ্যায় প্রকাশিত।
প্রকৃতির রহস্যময় বৈরীভাব ও প্রতিবন্ধকতার নির্মম শিকার হাসান-রাবেয়া দম্পতি। কঠোর আত্মপ্রত্যয়ী এ-দম্পতি এগার বছরব্যাপী সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার মাধ্যমে যে-ইতিহাস নির্মাণ করেন তা ফিকশনকেও হার মানায়। সন্তান লাভের দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষাকে অন্তরে ধারণ করে পৃথিবীর তাবৎ হাসপাতালঃ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল, টোকিও ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল, ব্যাংকক হাসপাতাল ছাড়াও অসংখ্য হাসপাতাল তারা চষতে লাগলেন - আধুনিকতম চিকিৎসা-পদ্ধতি যদি তাদের দেখাতে পারে কিছুটা আশার আলো! একটা ফুটফুটে সন্তানের জন্য বিশাল স্নেহময় একটি কোল পেতে আছে এক নারী আর এক পুরুষ। বুকের ভেতর তাদের ভালোবাসার আর স্নেহের এক উথাল-পাথাল নদী।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি, টেস্টটিউবের মাধ্যমে সন্তান জন্মদান পদ্ধতির সফলতা, এ-দম্পতির আপ্রাণ চেষ্টা, তদুপরি কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকারের অপরিসীম ও অমানবীয় ক্ষমতা, বিশাল ও মহৎ হৃদয় ডাক্তারদের হার্দিক প্রচেষ্টা, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসার ও সহানুভূতির হাত তাদের সুদীর্ঘকালব্যাপী লালিত আকাঙ্ক্ষাকে একদিন পরিপূর্ণতা দেয়। পৃথিবীর সকল মানুষকে চমকে দিয়ে, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসার আর্তিকে সফল করে, নিউইয়র্কের সেন্ট জন কুইন্স হাসপাতালে এক নির্মল সকালে পৃথিবীর আলো-বাতাসকে প্রথমবারের মতো গায়ে মাখে রোজাবেল। গর্বে বুক ভরে যায় একজন মায়ের, আনন্দের আতিশয্যে বাকরুদ্ধ হন একজন পিতা। পুরো পরিবার, তাদের আশ-পাশের অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, দেশ-বিদেশের অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষীর মুখে মুখে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধজয়ের সুখ।
যাপিত জীবনের এ-রুদ্ধশ্বাস মানবিক গল্প বাদল সৈয়দের শৈল্পিক বয়ানে হয়ে উঠে জীবনের গভীর সত্যের শিল্পরূপ। প্রতিটি শব্দে, বাক্যে মিশে থাকা হার্দ্য আবেগ আমাদের মানবিক বোধের খুব গভীরে স্পর্শ করে। ধ্বংসের উৎসবে মুখর আজকের পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত যখন ধ্বনিত হচ্ছে পাশবিকতার চিৎকার, মানুষের মানবিক অনুভূতি ও উপলব্ধিতে যখন প্রতিনিয়ত প্রকট হচ্ছে ক্ষয়িষ্ণুতার চিহ্ন- ঠিক সেই মুহুর্তে বাদল সৈয়দ আমাদের সামনে তুলে ধরেন ড ওয়াং, ড ফুজিয়ামা, ড সুপাকডে ও ড শিশির দত্তের মতো দয়ার্দ্র মহৎ মানুষের প্রতিচিত্র। সত্যিই, মানুষই পারে ভালোবাসতে। মানুষই পারে বাৎসল্যের মানবিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রাণপণ সংগ্রাম করতে। ভালোবাসা বর্ধিষ্ণুই, তা ক্ষয়িষ্ণু হতে পারে না কখনো। মানুষ তার কোষে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মব্যাপী এই অক্ষয় বীজ বহন করে আসছে। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও একটি শিশুর নিরাপদ জন্মের জন্য রাবেয়ার যে-কামনা, ভাইয়ের সুস্থ ও জীবিত সন্তানের কামনায় প্রয়োজনে নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করার জন্য মমতাময়ী বোন শাহীনের যে-কাতরোক্তি - তা পাঠককে নিয়ে যায় এক পরম মানবিক অনুভবের জগতে।
বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর, জাপান, জাপান থেকে আয়ারল্যান্ড, সেখান থেকে ব্যাংকক, আমেরিকা - পৃথিবীর তাবৎ দেশ ঘুরে, অসংখ্য চিকিৎসক, নার্স, শুভাকাঙ্ক্ষীর সাহায্য সহযোগিতার মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে এসেছে যে নতুন অতিথি রোজাবেল, হাসান তাকে সর্বজনীন মানব কল্যাণে নিবেদন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন - " মা, আমি তোমাকে বড় করবো মানুষের জন্য। You will be on this earth to help other people. " - এ আবেগমন্দ্রিত স্বরে ব্যক্ত হয় মহৎ প্রত্যয়।
===========================================
জন্মজয়
লেখকঃ বাদল সৈয়দ
প্রকাশকঃ ক্যাম্পেইন ফর আর্টস এন্ড মিডিয়া প্রমোশন,
চট্টগ্রাম। জুন ২০০৬
প্রচ্ছদঃ খালিদ আহসান
দামঃ ৭০ টাকা
***বিশদ সংবাদ ১ম বর্ষ (ফেব্রুয়ারি ২০০৭) ১ম সংখ্যায় প্রকাশিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন